সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:০৯ অপরাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদ :
নলছিটির দপদপিয়ায় বিএনপি নেতা রিমনের চাদাঁবাজী-দখল বানিজ্যে অতিষ্ঠ সাধারন মানুষ : বহিস্কার দাবী সাবেক আইজিপি শহীদুল হক-আব্দুল্লাহ আল মামুন গ্রেফতার ঝালকাঠিতে পুলিশ সুপার-রাজাপুর সার্কেলের বদলীজনিত বিদায়ী সংবর্ধনা বরিশাল জেলা বাস-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নে ৮ পদে রদবদল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে আহত ছাত্রদল নেতার পাশে বিএনপি নেতা জাহিদ বরিশাল জেলা মটরযান মেকানিক ইউনিয়নের এগারো সদস্যের পদত্যাগ  নলছিটি পৌরসভায় বরখাস্তকারী তিন কর্মচারী জোরপূর্বক কাজ করছেন চোখের দৃষ্টি হারানোর পথে কোটা সংস্কার আন্দোলনে আসাদুজ্জামান এর চিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তা নলছিটিতে বৃদ্ধের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট বরিশালের জাগুয়া ইউনিয়নে শান্তি বজায়ে চেয়ারম্যান আজাদীর উদ্যোগে সমন্বয়ক কমিটি গঠন

ববিতে পদন্নতী অনিয়মে দানা বাঁধছে শিক্ষক অসন্তোষ ’’আবারো হতে পারে ভিসি বিরোধী আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক:: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরির পদন্নতীতে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন প্রভাষক থেকেও ভিসির পছন্দের ব্যাক্তি না হওয়ায় পদন্নতী হচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেছেন বঞ্চিতরা। অথচ চাকুরীতে যোগদানের তারিখ পরে হলেও অনেক প্রভাষক সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন বলে জানা গেছে। আর এসব অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের দিকে। বঞ্চিতরা মনে করছেন সর্বচ্চ এই পদাধীকার ব্যাক্তির তোষামদি করতে না পারাটাই তাদের অযোগ্য বিবেচনার প্রধান কারন।

পদন্নতীর অনিয়মে ফুসে উঠছেন অন্যায়ের শিকার শিক্ষকরা। তাই বিগত সময়ের মত আবারো ঘটতে পারে অনাকাংখিত ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানিয়েছেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি প্রফেসর ড. ছাদেকুল আরেফিন এর দায়িত্বের চুক্তির মেয়াদ আগামী নভেম্বরে শেষ হচ্ছে। তার সময়ের শেষের দিকে তিনি বেশ কিছু শিক্ষককে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদন্নতী দিয়েছেন। জেষ্ঠ্যতা ভেংগে অনেককে পদন্নতী দেয়া হয়েছে এই অভিযোগে ফুসে উঠেছে পদন্নতী বঞ্চিত শিক্ষকরা।

যাদেরকে ভিসি পছন্দ করেননা তাদের পদন্নতী আটকে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বচ্চ এ কর্তা। পদন্নতীপ্রাপ্ত অনেকের চেয়ে চাকুরিতে আগে যোগদান করলেও ভিসির পছন্দের পাত্র না হওয়ায় তাদের পদন্নতী আটকে দেয়া হয়েছে বলে দাবী করছেন বঞ্চিত শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গণিত বিভাগের সুজিত কুমার বালা, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আফরোজা নাসরিন, মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক তাসমিন জাহান ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ফারজানা আফরোজ ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে চাকুরিতে যোগদান করলেও অদ্যবদি পদন্নতী পাননি।

এমনকি গণিত বিভাগের প্রভাষক ড. মহুয়া জাহান রুপা, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সাদমান সাকিব বিন রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রভাষক নুসরাত জাহান নিপু ও একই বিভাগের প্রভাষক তাসনিয়া সুমাইয়া ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাসে চাকুরীতে যোগদান করলেও এখনও পদন্নতীর স্বাদ পাননি। অথচ এই সকল শিক্ষকদের সমসাময়িক সময়ে কিংবা পরবর্তীতে যোগদান করেও প্রান রসায়ন বিভাগের প্রভাষক মোঃ হাসিব ও ফাহমিদা সুলতানা রিমা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ফারহানা আক্তার তানিয়া, মনিরা আক্তার, দর্শন বিভাগ থেকে শাহনাজ পারভিন রিমি, অর্থনীতি বিভাগের মামুনুর রহমান, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মোঃ শাহাদাত হোসেন ও ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক সুরাইয়া আক্তার পদন্নতী পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন।

একটি সূত্র জানিয়েছেন, বর্তমান শিক্ষক নেতাদের একটি গ্রুপ ভিসি অফিসের নিয়ন্ত্রন নিয়ে এইসব অনিয়মের সমর্থন যোগাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত রয়েছে ভিসির অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বললেই আটকে যায় পদন্নতী। আর প্রতিবাদকারী যেসকল শিক্ষকদের বাধ্যহয়ে পদন্নতি দেয়া হচ্ছে তাও নানা ধরনের হেনস্তার পর বলে জানা গেছে। তবে ভিসির আজ্ঞাবহ যাদের পদন্নতী দেয়া হয়েছে তাদের অনেকেরই পুরন হয়নি সকল শর্ত।

অভিযোগ রয়েছে ভিসির সাথে মতবিনিময় সভায় এক শিক্ষক বঞ্চিত হচ্ছেন বলে উঠে দাড়িয়ে কথা বললে তার পদন্নতীও ১ বছর ঝুলিয়ে রাখা হয়। সবশেষ গত ফেব্রুয়ারী মাসে পদন্নতীর বিজ্ঞাপন দিলেও সম্পন্ন হয়নি পদন্নতী কার্যক্রম। বরং নতুন করে আবারও বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। এতে করে আবারও দীর্ঘসূত্রীতায় পরে যাবার আশংকা করছেন অনেক শিক্ষক। ভিসির এধরনের হটকারী সিদ্ধান্তে অধিকাংশ শিক্ষক ক্ষুব্দ হয়ে উঠছেন। চাকুরীর এসব রাজনীতিতে গত ৩ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান কমে গেছে।

যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতিকে থমকে দিচ্ছে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন। খোদ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে প্রশাসনের এই দ্বিমুখী আচরন থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে। অন্যথায় দক্ষিনবঙ্গের এই বিদ্যাপিঠটি অচিরেই হুমকির মুখে পড়বে। এর আগেও শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিয়ে সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. ইমামুল হক কোরাম তৈরী করার কারনে থমকে গিয়েছিল শিক্ষাব্যবস্থা।

আন্দোলন ও সংগ্রামে শিক্ষার্থীরা হারিয়েছিলো তাদের মুল্যবান সময়। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল লেখাপড়া। যেই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদেরও অংশগ্রহন ঘটিয়েছিলেন শিক্ষকরা। অবরুদ্ধ ছিলো ভিসি ও তার অনুসারী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। দীর্ঘদিন পর সরকারের হস্তক্ষেপে সেই সমস্যার সমাধান হয়েছিল ওই ভিসি চলে যাওয়ার মধ্যদিয়ে। আবারও সেই রকম পরীনতির দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় হাটছে বলে শংকা প্রকাশ করেছেন বেশ কিছু নেতৃস্থানীয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাপারে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ছাদেকুল আরেফিনকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ বদরুজ্জামান ভূইয়া বলেন, পদন্নতী মুলত বিভাগ অনুযায়ী দেয়া হয়। যে বিভাগে পদ খালি থাকে সেখানেই পদন্নতীর ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। তাই প্রক্রিয়াটি ধীরগতির মনে হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন ...




© All rights reserved DailyAjkerSundarban