শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন

নলছিটিতে সরকারি লিজকৃত জলমহালের বাধ কাটার অভিযোগ

নলছিটিতে সরকারি লিজকৃত জলমহালের বাধ কাটার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:: ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কুমারখালিতে প্রবাহমান সুগন্ধা নদীর একটি মরা শাখা আছে, যা এলাকাবাসীর কাছে মরগাঙ্গী নামেই পরিচিত। পরবর্তীতে ওই মরা নদী চিড়িং চাষের জন্য জলমহল হিসেবে ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক এবং ১২০ একর ইজারাও দেয়া হয় সরকার থেকে।

১৯৮৬ সাল থেকে ওই অংশটি ইজারা নিয়ে চিড়িংসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে আসছেন উপজেলার অনুরাগ গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম (আসিফ) চৌধুরী। জানা যায়, ১৯৮৬ সালে থেকে দীর্ঘ মেয়াদী ইজারা নিয়েছেন তিনি। আর এরপর থেকে সবশেষ ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি সরকারী কোষাগারে প্রায় কোটি টাকা খাজনাও পরিশোধ করেছেন।

তবে সব কিছু স্বাভাবিক নিয়মে চললেও হঠাৎ করে গত ৩০ জানুয়ারী সকাল ১০ টায় জলমহলটির পশ্চিম-উত্তর পাশের বেড়িবাঁধ কেটে ফেলা ও ওই জলমহালটির গোডাউনে থাকা মাছের খাবার লুট করার অভিযোগ উঠেছে।

আর এ নিয়ে ভুক্তভোগী ইজারাদার ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গতকাল একটি লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়, ওই এলাকার জুয়েল জমাদ্দার, মাসুদ, রশিদ, জাকির হাওলাদার, জামাল, সোহেল মুন্সী, এদের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক ব্যাক্তি কোদাল, খোন্তা, রামদা ও লোহার রডসহ লাঠি সোটা ইত্যাদি মূল ভেরিবাধটি জোর পূর্বক কেটে ফেলে ও ওই জলমহালটির গোডাউনে থাকা কয়েক লক্ষাধিক টাকা মাছের খাবার লুট করা হয়।

অভিযোগে আরো বলা হয়, ১৯৯১-১৯৯২ সনে জলমহালটির ভেরিবাদ নির্মাণের জন্য সরকার ১০০ মেট্রিক টন গম বরাদ্দ প্রদান করেন। এবং ওই সময় লীজগৃহিতা ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ করে ভেরীবাদ নির্মানে সহায়তা করে। সেই হিসাবে তৎকালীন জেলা প্রশাসক উক্ত জলমহলটিকে বন্ধ জলমহাল হিসাবে ঘোষণা করেন। যার পরিপেক্ষিতে ইজারাদাররা নিয়মিত ভাবে চিংড়িসহ বিভিন্ন ধরণের মাছ চাষাবাদ করে আসছে। এছাড়াও স্থানীয় জুয়েল জমাদ্দার, মাসুদ, রশিদ, জাকির হাওলাদার, জামাল, সোহেল মুন্সী এর আগেও জলমহালটির গোডাউনে অগ্নিসংযোগ করে মালামাল লুট করে। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করে পুনরায় ভেরিবাধটি সংস্কার করা হয়।

এরপরও অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধ হয়ে আবার ভেরিবাধটি কাটতে আসে। তখন প্রশাসনের সহায়তায় ইজারাদাররা অভিযুক্তদের হাত থেকে ভেরীবাদটি কাটার থেকে রক্ষা করতে সক্ষম হয়। উক্ত ঘটনার পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ৪ সদস্য বিশিষ্ট টিম করে জমি পরিমাপের ব্যবস্থা করেন।

পরবর্তীতে কানুনগো উপজেলা ভূমি অফিস, সার্ভেয়ার উপজেলা ভূমি অফিস নলছিটি, সার্ভেয়ার ভূমি অধিগ্রহণ শাখা ঝালকাঠি, ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্তকর্তা পৌর ভূমি অফিস নলছিটি একটি প্রতিবেদন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কে প্রতিবেদন দাখিল করেণ এবং সেই প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের দাবিকৃত জমি লীজকৃত জমির মধ্যে এমন কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি। এরপর গত ৩০ জানুয়ারী সকাল ১০ টায় অভিযুক্তরা প্রায় শতাধিক ব্যাক্তিদের নিয়ে জলমহালটির মূল ভেরিবাধ কেটে ফেলে।

সংবাদটি শেয়ার করুন ...




© All rights reserved DailyAjkerSundarban