শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:: ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে সরকার পতনের পর পরই দেশজুড়ে শুরু হয়ে নানা অপ্রীতিকর কর্মকান্ড। নৈরাজ্য-লুটতরাজসহ নেতিবাচক সব কর্মকান্ড প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে সচেতন নাগরিকরা। সমন্বিত উদ্যোগে নানা ব্যবস্থাপনায় প্রতিরোধ গড়ে সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা বিরাজ রাখতে জোরদার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তারা। যাতে সাধারণ মানুষ ভীতি কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন অব্যাহত রাখতে পারেন।
আর নেতিবাচক সব কর্মকান্ড প্রতিরোধে শান্তি ফেরাতে সমন্বিত হয়ে কার্যকরী একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বরিশাল সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুফতি হেদায়েতুল্লাহ আজাদি। নিজ ইউনিয়নে শান্তি- শৃঙ্খলা ফেরাতে ইতিমধ্যে কার্যকরী সব ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যার সুফলস্বরুপ পুরো ইউনিয়নের মানুষকে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
ইউনিয়নকে নৈরাজ্য ও লুটতরাজের কবল থেকে রক্ষায় নিজ দুরদর্শী ব্যবস্থাপনায় সচেতন সব নাগরিক ও ছাত্রসমাজকে নিয়ে ঐক্য গড়ে তুলেছেন। যার ধরুন গতকাল নৈরাজ্য প্রতিরোধে শান্তি-শৃঙ্খলা শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেন তিনি। ইউনিয়ন পরিষদে ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্ব্বশীল জনপ্রতিনিধি , সচেতন নাগরিক , ইউনিয়নের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-সমাজ কে নিয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চেয়ারম্যান আজাদি।
পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সভা শুরু হয়। সভায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদ , মুগ্ধ সহ সকলকে শহীদের আখ্যা দিয়ে তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ ও মাঘফেরাত কামনা দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া নানা অপ্রীতিকর কর্মকান্ড প্রতিরোধে ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষকে সাথে নিয়ে আলোচনা সভায় নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়। একই সাথে শান্তি- শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ছাত্রসমাজকে নিয়ে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে সমন্বয়ক কমিটি গঠিত হয়। প্রত্যেক ওয়ার্ডে দায়িত্বশীল অন্তত ২০ জনকে সদস্যভুক্ত করা হয়।
দায়িত্বশীল গঠিত কমিটিকে ইউনিয়নকে সুরক্ষা প্রদান ও শান্তি বজায়ে ৭ ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণে নির্দেশনা ও সুপারিশ সকলের সমন্বয়-মতামতে ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেগুলো হচ্ছে, ১/ কোন ব্যক্তির উপর হামলা হলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
২/ রাতে পাহাড়ার ব্যবস্থা করা হবে।
৩/ বাজারগুলোতে পাহাড়া জোরদার করবে।
৪/ দোকানপাট এবং বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে এমন লোকদের প্রতিহত করা হবে।
৫/ জনবসতি নিশ্চিত করার লক্ষে কাজ করা হবে ।
৬/ কারো কাছে চাদা চাইলে ধরে বিচার নিশ্চিত করা হবে।
৭/ হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের কোন প্রকার যেন হামলা করা না হয়, এটা নিশ্চিত করা হবে।
এদিকে পুরো ইউনিয়নে ধর্মীয় উপাসনালয় রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা। বিশেষ করে তারা রাত জেগে হিন্দুদের উপাসনালয় রক্ষায় পাহারা দিচ্ছে। ইউনিয়নজুড়ে শান্তি বজায়ে চেয়ারম্যান আজাদির এসব সমন্বিত উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ।
চেয়ারম্যান হেদায়েতুল্লাহ আজাদি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা হলো শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্বা। তারা স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করেছে। আবারো নতুন এক স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। মুক্তি পেয়েছে বাঙ্গালী। রক্ষা হচ্ছে সার্বভৌমত্ব। স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্বে সোচ্চার হয়ে পতন ঘটিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছে তারা। জাতি তাদের এ অবদান কখনোই ভুলবেনা। তাদের এ স্বাধীনতাকে রক্ষায় আমাদের সমন্বিত হয়ে কাজ করতে হবে। শান্তি বজায়ে ঐক্য তৈরি করতে হবে । এজন্য ইউনিয়নে একটি অরাজনৈতিক ও নির্দলীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা শান্তি বিরাজে কাজ করবে। তিনি বলেন , শিক্ষার্থীদের কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ। ছাত্র-জনতার রক্ত ও আত্নত্যাগে দেশে ফিরেছে শৃঙ্খলা-শান্তি। আর সেটি রক্ষায় আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।