সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:: সরকারী কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বরিশাল নগরীতে চলছে কয়েক হাজার হলুদ আটোরিকশাসহ অবৈধ যানবাহন। ফলে বাড়ছে যানজট। ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। নগরীর নথুল্লাবাদ মোড়, চৌমাথা মোড়, লঞ্চঘাট মোড়,বটতলা মোড়,কাকলী মোড়,চকবাজার ও ফলপট্টি মোড়,সাগরদি বাজার মোড়সহ, রুপাতলী গোলচক্করে এতটাই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে যে, যেন সাধারন মানুষের চলাফেরার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার এপার থেকে ওপার যেতে হয়। নষ্ট হয় কর্মঘন্টা।যানজটের ফলে রুপাতলী থেকে আমতলা মোড় পর্যন্ত এবং সিএন্ডবি রোডের বিএডিসি থেকে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল পর্যন্ত প্রতিনিয়ত বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত যানজট লেগেই থাকে।মুল কারন হলুদ অটোসহ অবৈধ যানবাহন।
এসব অটোরিকশার অধিকাংশ বৈধ কোনো কাগজপত্র না থাকায় একদিকে সরকার যেমন মোটা অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি প্রতিদিন সড়কজুড়ে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে।ট্রাফিক পুলিশকেও মানছে না এই বেপরোয়া হলুদ অটোচালকরা।এসব গাড়ির মালিকরা অনেকটাই প্রভাবশালী। তারা তোয়াক্কা করছেনা ট্রাফিক বিভাগ ও আইন কানুনকে।
সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল শহরে বিগত কয়েক বছর ধরে এ হলুদ আটোরিকশা চালাচল করে আসছে। এমন কি বরিশাল নগরীর অলিগলিতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হলুদ অটোরিকশা। বরিশাল শহর কি ঢাকার যানজটের মত রুপ নিতে যাচ্ছে এ প্রশ্ন নগরবাসীর ।এখনই সাধারণ মানুষজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হিমশিম খাচ্ছে।
এমনকি বরিশাল শহরের বিভিন্ন এলাকায় হলুদ আটোরিকশা বানানোর ওয়ার্কশপ রয়েছে অসংখ্য। প্রতিটা ওয়ার্কশপে প্রচুর পরিমাণ হলুদ অটোরিকশা বানানোর কাজ চলছে। এতে নগরীতে বাড়তে পারে আরো কয়েক হাজার হলুদ অটোরিকসা। যার কারনে বাড়বে আরো যানজট ।দেখা দিবে বিদ্যুতের ঘাটতি।এ ছাড়া চোরাই ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে হলুদ গাড়ির গ্যারেজে চার্জ দেয়া হচ্ছে বলে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।এসব বেপরোয়া অটোরিকশার চলাচল নিয়ন্ত্রণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।
এদিকে, অটোরিকশার দৌরাত্মে নাজেহাল নগরবাসী দুষছেন প্রশাসনকে। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে বিট মানির বিনিময়ে এগুলো রাস্তায় চলে। তাই প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন হাজারও অদক্ষ চালক দিয়ে অটোরিকশা চলাচল করলেও তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না। তারা শুধু বৈধ পরিবহন ও মোটরসাইকেলের ওপর তাদের আইন প্রয়োগ করছে।
নগরীতে চলাচলকারী বেসরকারি একটি কোম্পানির কর্মকর্তা ইকবাল হাসান বলেন, বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও ট্রাফিক পুলিশ প্রতিদিন অফিসে যাওয়া আসার পথে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে। অথচ নগরীতে প্রতিদিন হাজার হাজার অবৈধ অটোরিকশা রাস্তা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
সকাল-সন্ধ্যা যানজট লেগেই থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন সময় তারা দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। পরে দেখা যায় ওইসব অটোচালকের কোনো লাইসেন্সই নেই।তা দেখেও যেন দেখছে না কর্তৃপক্ষ।
অটোরিকশার বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাত জানান ‘ যানযট নিরসনে প্রশাসন নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিনই অবৈধ অটোরিকশার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আটক করা হচ্ছে।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
বরিশাল বিআরটিএর পরিচালক মো. জিয়াউর রহমান বলেন, সামনে আর এসব অবৈধ যানবাহন তৈরি করবে না এমন শর্তে ওয়ার্কশপ মালিকদের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে লিখিত নেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি তারা বিনা অনুমতিতে এগুলো তৈরি করে তাহলে আর সতর্ক নয়, সোজা জেল-জরিমানা করা হবে।